কাশ্মীর সংকটের ঐতিহাসিক পটভূমি
কাশ্মীর সমস্যা মূলত ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত বিভক্তির সময় থেকেই শুরু হয়। এটি শুধুমাত্র একটি আঞ্চলিক বিবাদ নয়, বরং রাজনৈতিক, সামরিক এবং ধর্মীয় জটিলতার কারণে এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একাধিক যুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাশ্মীরের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে হলে আমাদের ফিরে তাকাতে হবে সেই সময়ের দিকে যখন ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিল।
কেন কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান বারবার যুদ্ধে জড়ায়
Table of Contents
ব্রিটিশ ভারত বিভক্তির পর কাশ্মীরের অবস্থান
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতকে স্বাধীনতা দেয় এবং মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা (Mountbatten Plan) অনুসারে ভারতকে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রে ভাগ করা হয়—ভারত ও পাকিস্তান। এই বিভাজনের মূল নীতি ছিল ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্তি, যেখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলো পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হবে, আর হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলো ভারতের অংশ হবে।

কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ৫৬২টি দেশীয় রাজ্য (Princely States) ছিল, যেগুলোকে স্বাধীনতা দেওয়া হয় নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য। তারা চাইলে ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দিতে পারত, অথবা স্বাধীন থাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারত।
কাশ্মীরের ভূ–রাজনৈতিক গুরুত্ব
- কাশ্মীর ছিল ৭৭% মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা, কিন্তু এর শাসক ছিলেন হিন্দু মহারাজা হরি সিং।
- এটি ছিল একটি বিশাল ভূখণ্ড (প্রায় ২,২২,২৩৬ বর্গকিলোমিটার), যা ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সংযোগস্থলে অবস্থিত।
- সামরিক এবং কৌশলগত দিক থেকে কাশ্মীরের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এটি পাকিস্তানের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং ভারত ও চীনের সীমানার কাছেও অবস্থিত।
- ইন্দাস নদীসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নদীর উৎপত্তিস্থল কাশ্মীর, যা ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের পানির উৎস।
ভারত ও পাকিস্তানের জন্য কাশ্মীর ছিল এক কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, তাই উভয় দেশই এটি দখল করতে চেয়েছিল।
মহারাজা হরি সিং ও কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তি
ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং পাকিস্তান বা ভারত কোন একটির সাথে যুক্ত হওয়া নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান কাশ্মীরের দিকে আক্রমণ শুরু করলে, হরি সিং ভারত সরকারের সাহায্য চেয়ে তার দেশকে ভারতীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে ভারতীয় সরকার সম্মতি জানায় এবং কাশ্মীরের সঙ্গী হয়ে ওঠে। এর ফলে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রবেশ ঘটে এবং কাশ্মীরের অবস্থা আন্তর্জাতিক বিষয় হয়ে ওঠে।
ভারত ও পাকিস্তানের প্রথম যুদ্ধ (১৯৪৭-১৯৪৮)
যুদ্ধের কারণ ও প্রেক্ষাপট
কাশ্মীরের ভারতীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তির পর পাকিস্তান এটিকে তাদের অংশ হিসেবে দাবি করতে থাকে। এর ফলস্বরূপ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রথম যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৪৭-১৯৪৮ সালে। পাকিস্তান কাশ্মীরের অধিকাংশ অংশ দখল করার চেষ্টা করে, তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও কাশ্মীরিরা তাদের প্রতিরোধ করে। যুদ্ধের ফলস্বরূপ, ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েই কাশ্মীরের কিছু অংশ দখল করে রাখে।
জাতিসংঘের মধ্যস্থতা ও লাইন অফ কন্ট্রোল
জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে যুদ্ধ থামানো হয় এবং একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে কাশ্মীরের সীমানা ‘লাইন অফ কন্ট্রোল’ (LoC) নামক একটি সীমারেখায় ভাগ হয়ে যায়, যা আজও কাশ্মীরের দুই অংশকে পৃথক করে রেখেছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়, তবে কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ (১৯৬৫ ও ১৯৭১)
১৯৬৫ সালের যুদ্ধ: অপারেশন জিব্রাল্টার
১৯৬৫ সালে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিতীয় যুদ্ধ শুরু হয়। পাকিস্তান কাশ্মীরের ভূখণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য অপারেশন জিব্রাল্টার চালায়, যা ভারতীয় অঞ্চলে আক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যুদ্ধটি বেশ কয়েক মাস স্থায়ী হয়, তবে শেষমেশ জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। যদিও এই যুদ্ধের ফলে কাশ্মীরের পরিস্থিতি কোনো বড় পরিবর্তন আনে না, তবুও এটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে গভীর অস্থিরতা সৃষ্টি করে।
১৯৭১ সালের যুদ্ধ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা
১৯৭১ সালে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় যুদ্ধ শুরু হয়, যার কারণ ছিল পাকিস্তানে মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই যুদ্ধে ভারত পাকিস্তানকে পরাজিত করে এবং বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দেয়। যদিও কাশ্মীর ইস্যু সরাসরি এই যুদ্ধে ছিল না, তবে এই যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে কাশ্মীরের বিষয়টি আবারও আন্তর্জাতিক আলোচনায় উঠে আসে।
কারগিল যুদ্ধ (১৯৯৯)
পাকিস্তানের গোপন অপারেশন
১৯৯৯ সালে কাশ্মীরে কারগিল যুদ্ধ শুরু হয়, যা পাকিস্তানের গোপন অপারেশন হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তানি সেনারা এবং কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতীয় কাশ্মীরে প্রবেশ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তা প্রতিরোধ করতে শুরু করে এবং প্রায় দু’মাসের মধ্যে পাকিস্তানকে পিছু হটাতে বাধ্য করে। এই যুদ্ধ ছিল অত্যন্ত তীব্র, এবং এতে বিপুল প্রাণহানি ঘটে।
কারগিল যুদ্ধ :এক যুদ্ধ, যা বদলে দিয়েছিল কাশ্মীরের ইতিহাস

ভারতের প্রতিরোধ ও যুদ্ধের ফলাফল
ভারতীয় সেনাবাহিনী যুদ্ধের প্রতিরোধে সফল হয় এবং পাকিস্তানকে পরাজিত করে। ভারতীয় সেনারা কাশ্মীরের উচ্চভূমিতে দখল পুনরুদ্ধার করে, এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। এই যুদ্ধের পর, কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং পরবর্তী বছরগুলোতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও খারাপ হয়।
কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি
কাশ্মীর অঞ্চলের পরিস্থিতি আজও অত্যন্ত জটিল এবং উত্তেজনাপূর্ণ। এই অঞ্চলকে নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে সংঘাত চলছে, এবং এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা হলো ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল (২০১৯), যা কাশ্মীরের রাজনীতি এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করেছে। এর সাথে সম্পর্কিত পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল (২০১৯)
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। এটি ভারতীয় সংবিধানের ধারা ৩৭০ এর আওতায় কাশ্মীরের অধিকারী বিশেষ সুবিধাগুলোকে বিলোপ করার জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ ছিল। এই ধারা কাশ্মীরকে স্বতন্ত্র কিছু রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক অধিকার প্রদান করেছিল। এর মধ্যে ছিল:
- কাশ্মীরের আইনসভা রাষ্ট্রীয় আইনের বাইরে স্বাধীনভাবে আইন তৈরি করতে পারত।
- কাশ্মীরের নাগরিকত্ব কেবল কাশ্মীরের বাসিন্দাদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল, অর্থাৎ অন্যান্য ভারতীয় নাগরিকরা কাশ্মীরে বসবাস বা সম্পত্তি অধিকারী হতে পারতেন না।
- বিশেষ অর্থনৈতিক সুবিধা ছিল, যেমন বাজেট বরাদ্দ, রাষ্ট্রীয় প্রকল্প এবং কর ছাড়ের সুবিধা।
ভারতীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর, জম্মু ও কাশ্মীরকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (Union Territory) হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যা দুটি আলাদা অঞ্চল, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ, দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ভাগ করা হয়।
এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীরের পুনর্গঠন, উন্নয়ন এবং সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের অবসান ঘটানো। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে অঞ্চলটিতে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়, যার ফলে বহু মানুষ ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
ভারতীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তান তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। পাকিস্তান এ পদক্ষেপকে অবৈধ এবং আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে এবং এর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ শুরু করে। পাকিস্তান সরকারের দাবি ছিল যে, ভারত কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ বিষয়কে আন্তর্জাতিক বিষয় হিসেবে পরিবর্তন করে ফেলেছে। এরই মধ্যে পাকিস্তান:
- বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, বিশেষ করে পাকিস্তান চেয়েছিল যে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ভারতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিক।
- কাশ্মীরী জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য পাকিস্তান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে আওয়াজ তোলে।
- প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে কাশ্মীর সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি বাড়ায় এবং সেখানে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা তৈরি করে।
পাকিস্তান ভারতের এই পদক্ষেপের পর তিনটি প্রধান পররাষ্ট্রনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছিল:
- ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালত এবং জাতিসংঘ-এর মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করা।
- বিশ্ব ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল মুদ্রা তহবিল (IMF)-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে কাশ্মীরের পরিস্থিতি তুলে ধরা।
- ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নিষ্ক্রিয় করা, যার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া এবং যোগাযোগ সীমিত করা।
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। কিছু দেশ ভারতের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানায়, বিশেষ করে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে এটি দেখা হয়। তবে বেশ কিছু দেশ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ভারতের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে এবং কাশ্মীরি জনগণের মানবাধিকার রক্ষার জন্য আহ্বান জানায়।
জাতিসংঘ, বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, কাশ্মীর সংকটের ক্ষেত্রে সবসময়ই সচেতন ছিল। তবে গত কয়েক বছরে জাতিসংঘ কাশ্মীর নিয়ে অধিক কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি, যেহেতু এটি একটি অত্যন্ত জটিল আন্তর্জাতিক বিষয় এবং সেখানে শক্তিশালী সদস্য দেশগুলোর মতবিরোধ রয়েছে।
চীন-ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, কারণ চীন এই অঞ্চলের একটি অংশ, অक्सাই চিন, দাবি করে। চীনের প্রতিক্রিয়া ছিল যে, কাশ্মীরের পরিবর্তিত পরিস্থিতি তাদের সীমানা এবং নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে, এবং তারা ভারতকে এর ফলস্বরূপ উত্তেজনা সৃষ্টি করতে নিষেধ করে।
এছাড়া, বিশ্ব ব্যাংক এবং আইএমএফ এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কাশ্মীরের পরিস্থিতি মনিটর করছে এবং তাদের নিজস্ব অবস্থান স্থির করছে। তবে, অধিকাংশ দেশ কাশ্মীর সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রত্যাশা করে, তবে তাদের কেউই সরাসরি কোনো শক্ত পদক্ষেপ নেয়নি।
কাশ্মীর সংকটের ইতিহাস এক বিশাল আক্ষেপের গল্প, যা আজও বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে। যদিও বেশ কয়েকটি যুদ্ধের পরও সমাধান বের হয়নি, তবে ভবিষ্যতে কূটনৈতিক উদ্যোগ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় শান্তির সম্ভাবনা রয়েছে।